পেরিকরোনাইটিসঃ অবহেলা করবেন না

সাধারণতঃ দাঁত গজানোর সময় বা আংশিক গজানো অবস্থায় দাঁতের উপরস্থ পার্শ্বস্থ টিস্যুর সংক্রামিত অবস্থা পেরিকরোনাইটিস নামে পরিচিত। সাধারণতঃ ১৮-৩০ বৎসরের যুবক যুবতীরাই এই রোগের শিকার হয়ে থাকে। নিচের চোয়ালের আক্কেল দাঁতটি যখন আংশিক গজানো থাকে বা গজানোর চেষ্টা করে তখনই এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায় এবং এটিই আলোচ্য বিষয়।

কখন বুঝতে পারবেন এই রোগ হচ্ছেঃ

❇️ আপনার বয়স ১৮-৩০ বৎসর (সাধারণতঃ)।

❇️কয়েকদিন যাবৎ নিচের চোয়ালের সর্বশেষ প্রান্তে চাপা চাপা ব্যথা অনুভব করছেন।

❇️ খাবারের সময় বা দাঁত ব্রাশ করার সময় ঐ স্থানে ব্যথা অনুভূত হচ্ছে।

❇️ মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে।

❇️ ধীরে ধীরে মুখ ফুলে যাচ্ছে।

❇️ হা করতে কষ্ট হচ্ছে, কোন কিছু চিবিয়ে খেতে পারছেন না।

❇️ শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, দুর্বল অনুভব করছেন।

উপরোক্ত লক্ষণগুলো আংশিক দেখা দিলেই আপনার উচিৎ হবে মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া। এর পূর্বে আপনি নিজেও কিছুটা পরিচর্যার ভার নিতে পারেন।

❇️ হালকা গরম পানিতে কিছুটা লবণ মিশিয়ে তা দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।

❇️ কিছুটা ব্যথা করলেও ব্রাশ করে মুখ ও দাঁত পরিষ্কার রাখবেন।

মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ এই রোগের সম্ভাব্য যে চিকিৎসা সমূহ করবেনঃ

❇️ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ও ব্যথা নিরোধক ঔষধ দেবেন।

❇️ উপরস্থ টিস্যুগুলোর আভ্যন্তরে খাদ্যকণা জমা থাকে-তা ওয়াশ করবেন।

❇️ পুজ জমা থাকলে তা নির্গমনের ব্যবস্থা করবেন।

❇️ পরবর্তীতে যদি প্রয়োজন মনে হয রেডিওগ্রাফ এর মাধ্যমে দাঁতের অবস্থান দেখে তা সংরক্ষণ বা উত্তোলনের ব্যবস্থা করবেন।

কোন কোন ক্ষেত্রে উপরের চোয়ালের আক্কেল দাঁতটি তুলে ফেলার প্রয়োজন হয়। অনেক সময় দেখা যায় আক্কেলদাঁত সংরক্ষণের জন্য রােগী বা রােগীর আত্মীয় স্বজন চিকিৎসকের উপর চাপ সৃষ্টি করে অথবা আক্কেল দাঁত উত্তোলনের কথা শুনে পরবর্তীতে আর চিকিৎসার জন্যেই আসেন না। আপনার যে আক্কেল দাঁতটি তুলে ফেলাই চিকিৎসক উত্তম মনে করেন তা আপনি পুষতে থাকলেন যা জন্ম দিতে পারে নতুন জটিলতা।

❇️ পূনঃ পূনঃ পেরিকরােনাইটিস রােগ হতে পারে ।

❇️ চিকিৎসায় দেরি হলে সংক্রমণ ছড়িয়ে মুখ মন্ডলের অন্যান্য দিক ও গলার দিকও আক্রান্ত হতে পারে যা সেলুলাইটিস নামে পরিচিত। এটি অনেক সময় মৃত্যুঝুকি পরিণত হয়।

❇️ আক্কেল দাঁতের পার্শ্বস্থ হাড়ে অসটিওমাইলাইটিস রোগ হতে পারে।

❇️ আক্কেল দাঁতের সম্মুখের দাঁতটি ধীরে ধীরে নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে।

যে কারণে পেরিকরােনাইটিস রােগ হতে পারেঃ

❇️ দাঁতের উপরস্থ টিস্যুগুলাে স্বাভাবিক নিয়মে ক্ষয় প্রাপ্ত না হলে বিপরীতে অবস্থিত দাঁত থেকে উত্তোলিত দাঁতের উপরস্থ টিস্যুগুলোর উপর বার বার কামড় পড়লে অথবা আঘাত লাগলে ।

❇️ উত্তোলিত দাঁতের উপরস্থ নরম টিস্যুগুলাের ফাঁকে খাদ্যকণা, রোগজীবাণু প্রবেশ করলে।

যেহেতু পেরিকরােনাইটিস দাঁত বৃদ্ধির প্রাক্কালে হয়ে থাকে যে কোন সুস্থ্য যুবক যুবতী যারা দাঁতের পরিচর্যা করেন সঠিকভাবে তারাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক চিকিৎসা এই রোগের পরবর্তী জটিলতা সমূহ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

  • Call us: +8801611606095
  • Click to Chat
    Scroll to Top