আঁকা-বাঁকা দাঁতের চিকিৎসা – অধ্যাপক ডাঃ নাসির উদ্দিন
আঁকা-বাঁকা দাঁতের সমস্যা মানুষের দাঁতের সমস্যাগুলোর মধ্যে খুবই পরিচিত এবং সাধারণ একটি সমস্যা। আঁকা-বাঁকা দাঁতের কারণে একজন মানুষকে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। যাদেরই আঁকাবাঁকা দাঁত তারা যতই ব্রাশ করুক যে দাঁতটা ভেতরে থাকে সেটা পরিষ্কার করা যায় না। ব্রাশ না লাগলে দাঁত কালো কালো হয়ে যায়, দাগ হয়ে যায়। সেখানে স্টেইন পড়ে, পরবর্তীকালে পাথর হয়। তখন জিনজিভাইটিস হয়, গ্রামের ভাষায় বলে পায়োরিয়া। মুখে থেকে দুর্গন্ধ আসা, রক্ত পড়া , পুঁজ আসে। এটা আঁকাবাঁকা দাঁতের একটা বড় সমস্যা। যখনই একটা দাঁত উঁচু থাকে তখন দাঁতের গোড়া ধীরে ধীরে করাতের মতো ক্ষয় হয়ে যায়। এতে দাঁতে শিরশির করে। এতে করে ভবিষ্যতে দাঁতে রুট ক্যানেল করারও প্রয়োজন পড়ে। এছাড়াও আঁকা-বাঁকা দাঁত নিয়ে একজন মানুষ প্রতিনিয়ত হীনমন্যতায় ভোগেন। হাসতে গিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার বদলে তিনি ধিরে ধিরে আত্মবিশ্বাস হারাতে শুরু করেন যা তার মানসিক সাস্থে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিভিন্ন কারণে একজন মানুষের দাঁত আঁকা-বাঁকা হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। বাচ্চাদের মুখে সাধারণত ২০টি দুধের দাঁত আসে। এই দুধদাঁতগুলো পড়ে গিয়ে দীর্ঘস্থায়ী দাঁতগুলো মুখের ভেতর আসে। কোনো কারণে যদি এই দুধের দাঁত সময় মতো না পড়ে আগেই পড়ে যায় তাহলে নিচে যে দাঁতটা থাকে সে শেকড় হারিয়ে ফেলে এবং আর ঠিকমতো উঠতে পারে না। মাঝামাঝি উঠে, কখনো বাইরে চলে যায়, কখনো ভেতরে চলে যায়, আবার কখনো বা যেখানে জায়গা পায় সেখানে বেড়ে উঠতে শুরু করে। এছাড়াও বাবা-মায়ের যদি এই সমস্যা থাকে তাহলেও বাচ্চার দাঁত আঁকা-বাঁকা হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। শিশুকালেই যদি এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাহলে আঁকাবাঁকা দাঁত হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। উঁচু-নিচু বা আঁকাবাঁকা দাঁত থাকলে দাঁতের ব্রেস লাগিয়ে ও বিভিন্ন পদ্ধতিতে দাঁত সোজা ও সুন্দর করা যায়। অল্প বয়সে চিকিৎসা শুরু করলে অতি দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে সুফল মেলে। এই চিকিৎসার জন্য অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ অর্থডেনটিস্টের কাছে যেতে হবে।
শিশুর আঁকা-বাঁকা দাঁত বেড়ে উঠতে দেখলে দেরি না করে অতি দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা উচিত।