মুখের ক্যান্সার ও ঘা এর চিকিৎসা

ক্যান্সার রোগের নাম শুনলেই আমাদের মনে ভীতির সঞ্চার হয় এবং মনে হয় এটি এমন একটি রোগ যা শরীরে বাসা বাঁধলে মৃত্যু অবধারিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি সাধনের পরও অনেক ভুল তথ্য এবং গুজব কোন রোগ সম্পর্কে আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং সঠিক চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে অনীহা সৃষ্টি করে। অথচ বর্তমান আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সহায়তায় ক্যান্সার অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময় যোগ্য। এর জন্য শুধু প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।

বর্তমান সময়ে মুখের ক্যান্সার বা ওরাল ক্যান্সার বিশ্বের সষ্ঠ প্রাণঘাতী ক্যান্সার হিসেবে পরিচিত। এই ক্যান্সার প্রাথমিক স্তরে ধরা পড়লে এবং বিনা কালক্ষেপণে চিকিৎসা শুরু করা গেলে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুখের ক্যান্সার ৫০ এর বেশি বয়সী নারী-পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। কিছুকিছু মুখের ক্যান্সার যেমন Sarcomaবাচ্চাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই এই ক্যান্সার মুখের ক্ষত বা ঘা থেকে শুরু হয় যা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।

মুখের অভ্যন্তরে কোথাও যদি এই ধরনের লক্ষন দেখা যায়, যেমন –

  • মুখের অভ্যন্তরে কোথাও আকস্মিক ঘা দেখতে পাওয়া যা দ্রুত বাড়তে থাকে
  • মুখের ভিতর কোন মাংসপিন্ড দৃষ্টিগোচর হওয়া
  • হঠাৎ দাঁত উঁচু হয়ে যাওয়া বা নড়তে থাকা
  • মুখের হা বন্ধ হতে থাকা
  • মুখের ভিতর মাংস পেশী শক্ত হতে থাকা
  • আকস্মিক ফুলে যাওয়া
  • লাল কিংবা সাদা বর্ণের ক্ষত সৃষ্টি হওয়া,
  • মুখের ভেতরে কোথাও তীব্র ব্যথা অনুভব করা,
  • জিহ্বায় ব্যথা কিংবা খাবার গিলতে বা চিবাতে অসুবিধা হওয়া

এই ধরনের কোন উপসর্গ দেখা দিলে এবং দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকলে কালক্ষেপণ না করে একজন ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়ায়ল সার্জনের সরনাপন্ন হতে হবে। মুখের ক্যান্সার প্রাথমিক অবস্থায় থাকতেই শনাক্ত করা অতি জরুরি। এর কারণ প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ সনাক্ত করা না গেলে ধীরে ধীরে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্যান্সার ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। শরীরের অন্য কোথাও এই ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে তখন এই চিকিৎসা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়।

জেনে রাখা ভালো, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা সম্ভব হলে শতকরা ৯০ ভাগ রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়। মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা সাধারণত পর্যায়ভেদে সার্জারি, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।

অধ্যাপক ডাঃ নাসির উদ্দিন

বিভাগীয় প্রধান, ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল

  • Call us: +8801611606095
  • Click to Chat
    Scroll to Top